Kiosk অধ্যয়ন গাইড আৰু কৌশল

সুঠাম সুশৃঙ্খল শরীর,
তাকে শ্রদ্ধা করি আর
দরকারের সময় তার উপর
আস্থা রাখি।
মার্থা গ্রাহাম,
আমেরিকীয় নৃত্যশিল্পী,
১৮৯৪-১৯৯১

আত্ম শৃঙ্খলা গড়ে তোলা

আত্মশৃঙ্খলা
আত্মশৃঙ্খলাকে একধরণে মনোনীত প্রশিক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করতে পারি। যে কিনা নতুন নতুন চিন্তা-ভাবনা, কাজ-কর্ম, কথা-বার্তার উপযুক্ত অনুশীলন করতে প্রেরণা এবং উৎসাহ যোগায়। আত্মোৎকর্ষের এরকম সাধনা ব্যক্তির ঈস্পিত লক্ষ্যে পৌঁছুবার পথ প্রশস্ত করে।
নিজে বেছে নেয়া কিছু নির্দিষ্ট কাজের অভ্যেসের মধ্যি দিয়ে আত্মশৃঙ্খলা আয়ত্ত করা যায়।
মারাত্মক কিছু একটা বলে দূরের থেকেই অস্বীকার না করে আত্মশৃঙ্খলাকে গ্রহণ করা উচিত যোগাত্মক দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে ।

দিনের নির্দিষ্ট একটা সময় ঠিক করে নিয়ে ছোট করে হ'লেও একটা কাজ করবার কথা ভেবে নাও।
সেই নির্দিষ্ট সময় না আসা অব্দি আগে থেকেই কাজটা সেরে ফেলার ইচ্ছেকে চেপে রাখো।

  • সকাল -সন্ধ্যে বেলা করবার জন্যে দুরকমের কাজ ঠিক করে নাও।
  • কাজটার জন্যে শুরুতেই ১৫ মিনিট থেকে বেশি সময় নিও না।
  • সঠিক সময় অব্দি অপেক্ষা করো। সময় হবার সঙ্গে কাজটি শুরু করো।
  • কম করেও দু'মাস ধরে এই কর্মসূচী অনুসরণ করো।

সুবিধেগুলোঃ এরকম কর্মসূচী আপনাকে কাজগুলোর প্রতি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মনোযোগ কেন্দ্রিভূত করতে সাহায্য করবে। যিকোনো কাজের শেষের থেকে শুরুর দিকটায় মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করাটা বেশি জরুরি। এরকম করে ভাবতে পারলে, কাজ আরম্ভ করে এগুলে দীর্ঘসূত্রীতা এড়ানো সহজ হয়ে যাবে।

  • কাজ ঠিক করো , সময় ঠিক রাখো। হুজুগে কাজ করো না।
  • যে কাজগুলো করছো সেগুলোর অগ্রগতির প্রতি সচেতন দৃষ্টি রেখো। নির্ধারিত সময় শেষ হবার পর কাজটির জন্যে নির্ধাৰিত সময়ের মধ্যে তুমি কতটা এগুলে বা এগুবার বাকি থাকল পরিষ্কার করে লিখে রাখো।

সুবিধেগুলোঃ কাজের অগ্রগতি সম্পর্কিত লিখে রাখলে তোমার করা কাজটির জন্যে যে সময় ব্যায় হলো তার হিসেব মেলার সুবিধে হবে।

  • নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজগুলো শেষ হয়ে গিয়েও যদি সময় হাতে থেকে যায় তবে তার সদ্ব্যবহার করবার কথাও ভাবতে পারো। এই যেমন নোট তৈরি করা, অন্য কাজের পরিকল্পনা করা ইত্যাদি-- সেগুলোর কথাও লিখে রাখো।

দৈনন্দিন কর্মসূচীৰ সফল রূপায়ণ করে নিজের সামর্থ্যকে উজ্জীবিত করো।

  • দিনের ক'ঘণ্টা লাগাতার একই কাজে বা বিষয়ে ব্যয় করলে অন্য কাজ করা হয়ে উঠে না। তার উপর যদি কাজটা শেষ না হয়, তাতে হয়তো পরের দিনও ব্যয় করতে হলো তাতেই।এমন হবার চে' ভালো দিনের নানা সময়কে নানা কাজে ভাগ করে ফেলো।
  • দৃঢ়তার সঙ্গে সময়সূচীর প্রতি দায়বদ্ধ হও।
  • সময় নির্ধারণ না করে কোনো কাজে হাত দিও না। রুটিন করে কাজ করবার অভ্যেস গড়ে তোলো। ব্যস।
  • এই পদ্ধতি বা কৌশল তোমার হোমওয়ার্ক , প্রকল্প ইত্যাদিতেও প্রয়োগ করে দেখো সফলতার সঙ্গে শেষ করে ফেলতে পারবে।

সুবিধেগুলো : সব কাজ এক সঙ্গে করো না, করো ছোট ছোট ভাগে। প্রথমে অভ্যেস গড়ে তোলো। পরে অভ্যেস তোমাকে টেনে নিয়ে যাবে।

আত্ম শৃঙ্খলার সাহায্যে সময়ের গুরুত্ব বোঝে নিয়ে তাকে যথাযথ ব্যবহার করতে শেখো।
সময় সম্পর্কিত ধ্যান জ্ঞান আয়ত্ত করাটা খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ ।
তোমার নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকলে সময়কেও নিয়ন্ত্রণাধীন করতে পারবে।
নির্দিষ্ট কাজগুলো রূপায়নের মধ্যি দিয়ে আত্মশৃঙ্খলার অনুশীলন শুরু করো আর সেই থেকেই নিজের দক্ষতা বাড়াবার প্রস্তুতির যাত্রাতে এগিয়ে চলো।

সুবিধেগুলোঃ কাজের উপর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আসতে পারলেই তুমি নিজেকেও শৃঙ্খলিত করতে পারবে।
নিজেকে অনুশাসিত করতে পারলে সময়ের মর্যাদা এবং গুরুত্ব উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে।
তেতিয়াহে মনলৈ আত্মবিশ্বাস আহিব ।

আত্মশৃঙ্খলার সম্পর্কে একটা নোট বই নিজের সঙ্গে রাখো।

  • এতে তুমি যে কাজগুলো করতে যাচ্ছ, তার শুরুর আর শেষের সময় লিখে রাখো।
  • তোমার অগ্রগতির খতিয়ান লিখে যাবার সঙ্গে সঙ্গে সেগুলোর পুনর্ণিরীক্ষণের জন্যেও ব্যবস্থা রেখো।

সুবিধেগুলোঃ কাজের দৈনন্দিন এই নোট বইটা তোমার কাজের গতি-প্রকৃতির একটা ছবি তুলে ধরবার এক মূল্যবান উপকরণ হতে পারে। গুৰুত্ব অনুযায়ী কোন কাজগুলো আগে করবে আর কোনগুলো পরে সে নিয়েও ধারণা করতে পারবে যাতে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে দরকারী কাজের সময় নির্ধারণ করতে সহজ হয়।

তোমার লেখাপড়া এবং অন্যান্য কাজ তালিকাভুক্ত কর ঃ

  • প্রতিটা কর্মদিনের শুরুতেই দিনটিতে অধ্যয়ন করবার বিষয় বা করবার কাজের সঠিক পরিকল্পনা ভাগ ভাগ করে সেগুলো তালিকাভুক্ত করে ফেলো যাতে কাজগুলো দিনের ভেতরেই ভালোভাবে শেষ করতে পারো ।
  • অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তালিকাটি তৈরি করো ।
  • যখনকার যে কাজ শুরু করবার সেটি তৎক্ষণাৎ শুরু করবার জন্যে দৃঢ় হও ।
  • লাগাতার ক'দিন ধরে এই নিয়ম মেনে কাজ করো আর দেখো সেটি অভ্যাস হিসেবে গড়ে উঠেছে কি না !
  • একবার একটা অভ্যাস হলেই তুমি আগে একটা কাজের জন্যে যেটুকু সমইয় নিতে তার অনেকটাই বেঁচে যায়। এরকম সমইয় বাঁচলে তুমি অন্য আরো কাজ বের করে নিতে পারবে। কতটা , সেটি নির্ভর করবে তোমার আর তোমার অভ্যেসের উপর।

সুবিধেগুলোঃ দিনটি শুরু করতেই করবার কাজের একটা স্পষ্ট ধারণা করে নিতে পারলে প্রণালী বদ্ধ ভাবে সম্পন্ন করতে পারবার সম্ভাবনাটি তোমাকে উৎসাহী করে রাখবে। ফলে বৃথাই সময় নষ্ট করবার হাত থেকে রক্ষে পেয়ে যাবে।

সতর্কীকৰণঃ

  • সময়ের কাজ সময়ে শেষ করতে না পারলে শঙ্কিত হয়োনা। প্রত্যাহ্বানের মুখামুখি হতে সাহস করো।
  • যদি কিছু ভুল হয় বা বাধা পাও , তখনো ভেবো না। সহজভাবে নাও। ভেবো, জীবনে এগুলো নিতান্তই স্বাভাবিক ঘটনা।
  • তেমন অবস্থার সম্মুখীন হলে খানিক থেমে যাও । তার পর নিজেকে পরিস্থিতির মোকাবেলা করবার জন্যে তৈরি করো এবং নতুন উদ্যমে কাজে নেমে পড়ো।

কয়েকটি কৌশলঃ
পুরোনো অভ্যাসের সঙ্গে নতুন অভ্যেস যোগ করো ঃ
যদি তোমার এক কাপ চা কিম্বা কফিতে দিন শুরু করার অভ্যেস আছে তবে খেয়ে নাও । তার পরে শুরু করো।

সুবিধেগুলোঃ এরকম পুরোনো অভ্যেসের সঙ্গে নতুন অভ্যাসের সংযোজন তোমাকে অহেতুক চাপের থেকে বাঁচিয়ে রাখবে। নতুবা নতুন অভ্যাসগুলো আয়ত্ব করতে গিয়ে তোমার অনভ্যস্ত মনটিকে পুরোনোর থেকে বিচ্ছিন্ন করবার দুঃখ কাজের তালিকার সঙ্গে তোমার একাত্ম হবার পথে বাধার সৃষ্টি করতে পারে।

নতুন কর্মতালিকার অগ্রগতি চিহ্নিতকরণঃ
তুমি যে কর্মতালিকাটি তৈরি করেছ একএকটা কাজ শেষ হবার পর চিহ্ন দিয়ে যাবার ব্যবস্থা করো। এ কাজটা সহজে করবার জন্যে তোমার স্নানের ঘরের কেলেণ্ডারে, খাবার টেবিলে বা কম্প্যুটারে সে ব্যবস্থা করে রাখতে পার।

উপকাৰঃ এভাবে চোখে পড়বার মতো চিহ্নিতকরণের কাজটি তোমাকে তোমার কাজের অগ্রগতির সম্পর্কে জানান দিয়ে যেতে থাকবে। পরের কাজের প্রেরণাও পাবে।

আদর্শ ব্যক্তিত্ব তথা রোল মডেলঃ
জীবনে তুমি যে সব আকর্ষণীয় বিখ্যাত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে এসছো তাদের লক্ষ্য করো । কিসে তাদের পরিশীলিত আর সুশৃঙ্খল জীবন গড়তে সাহায্য করেছে সে কথাগুলো বুঝবার চেষ্টা করো। জীবনের লক্ষ্যপূরণে আত্মশৃঙ্খলা এবং তার সহযোগী অভ্যাসগুলো কী ভাবে প্রভাবান্বিত করেছে!তাদের থেকে জানবার চেষ্টা করো, পরামর্শ নাও ।